প্রাথমিক অংশ

চাঁদনী থেকে ন’সিকে দিয়ে একটা শর্ট কিনে নিয়েছিলুম। তখনকার দিনে বিচক্ষণ বাঙালীর জন্য ইয়োরোপীয়ন থার্ড নামক একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান ভারতের সর্বত্র আনাগোনা করত। হাওড়া স্টেশনে সেই থার্ডে উঠতে যেতেই এক ফিরিঙ্গী হেঁকে বলল, ‘এটা ইয়োরোপীয়নদের জন্য।’ আমি গাঁক গাঁক করে বললুম, ‘ইয়োরোপীয়ন তো কেউ নেই চল, তোমাতে আমাতে ফাঁকা গাড়িটা কাজে লাগাই। এক তুলনাত্মক ভাষাতত্ত্বের বইয়ে পড়েছিলুম, ‘বাঙলা শব্দের অন্ত্যদেশে অনুস্বার যোগ করিলে সংস্কৃত হয়; ইংরিজী শব্দের প্রাগ্‌দেশে জোর দিয়া কথা বলিলে সায়েবী ইংরিজী হয়।’ অর্থাৎ পয়লা সিলেব্‌লে অ্যাকসেন্ট দেওয়া খারাপ রান্নায় লঙ্কা ঠেসে দেওয়ার মত–সব পাপ ঢাকা পড়ে যায়। সোজা বাঙলায় এরি নাম গাঁক গাঁক করে ইংরিজী বলা। ফিরিঙ্গী তালতলার নেটিব, কাজেই আমার ইংরিজী শুনে ভারি খুশী হয়ে জিনিসপত্র গোছাতে সাহায্য করল। কুলিকে ধমক দেবার ভার ওরি কাঁধে ছেড়ে দিলুম। ওদের বাপখুড়ো মাসীপিসী রেলে কাজ করে–কুলি শায়েস্তায় ওরা ওয়াকিফহাল।