আকাশে অষ্টমীর চাঁদ। একপাশে হেলে পড়ে আছে। পৃথিবীতে তাই আবছা আঁধার। এই আঁধার চোখ মেলে দেখা যায়। সব জীবন্ত প্রাণীর চোখে এই মজার ধাঁধা–খাঁটি অন্ধকার দেখার সাধ্য নেই। একটু আলো চাই। আঁধার একটু আবছা হওয়া চাই। নইলে চোখ টের পাবে না, অন্ধকারে একেবারেই অন্ধ হয়ে থাকবে। এখন মাঝরাত্রি পার হয়ে গিয়েছে। রাত্রি কিন্তু নিঝুম হয় নি। রাত্রিচর পাখি ও পশুর আওয়াজ ঘুমন্ত পৃথিবীতে প্রাণের সাড়া তুলছে, বিচিত্র সে আওয়াজ–মধুর ও কর্কশ। ওদের যেন জগৎ-সংসারকে জানিয়ে দেবার দায় যে, প্রাণীরা রাত্রির অবসরে একটু শুধু ঘুমিয়েছে, তারা মরে নি, তারা আবার জাগবে। হঠাৎ প্রায় একসঙ্গে গর্জন করে ওঠে কয়েকটা বন্দুক। একসাথে এমনভাবে মিশে যায় আওয়াজ যে, আন্দাজ করা কঠিন হয় কটা বন্দুক গর্জন করেছে। প্রকাণ্ড বাঘটা নিঃশব্দেই এসেছিল। যে আবার একঘায়ে গরু মহিষ মানুষের ঘাড় ভেঙে দিতে পারে, এত বড় বাঘ সেই থাবা মাটিতে পেতে হটে কিন্তু শব্দের মৃদুতম কম্পনটুকুও ওঠে না!