শীতের উজ্জ্বল জ্যোৎস্নারাত, তখনো কুয়াশা নাবে নাই। বাঁশঝাড়ে তাই অন্ধকারটা তেমন জমজমাট নয়। সেখানে আলো-অন্ধকারের মধ্যে যুবক শিক্ষক একটি যুবতী নারীর অর্ধ-উলঙ্গ মৃতদেহ দেখতে পায়। অবশ্য কথাটা বুঝতে তার একটু দেরি লেগেছে, কারণ তা ঝট্ করে বোঝা সহজ নয়। পায়ের ওপর এক ঝলক চাঁদের আলো। শুয়েও শুয়ে নাই। তারপর কোথায় তীব্রভাবে বাঁশি বাজতে শুরু করে। যুবতী নারীর হাত-পা নড়ে না। চোখটা খোলা মনে হয়, কিন্তু সত্যিই হাত-পা নড়ে না। তারপর বাঁশির আওয়াজ সুতীব্র হয়ে ওঠে। অবশ্য বাঁশির আওয়াজ সে শোনে নাই। কিন্তু কখন সে মৃতদেহটি প্রথম দেখে? এক ঘণ্টা, দু-ঘণ্টা আগে? হয়তো ইতিমধ্যে এক প্রহর কেটে গেছে, কিন্তু যুবক শিক্ষক সে কথা বলতে পারবে না। মনে আছে সে বাঁশঝাড় থেকে বেরিয়ে এসেছিল। চতুর্দিকে ঝলমলে জ্যোৎস্নালোক, চোখ-ধাঁধানো উজ্জ্বল আলো। তখন সে দৌড়তে শুরু করে নাই। বাঁশঝাড়ের সামনেই পূর্ণ জ্যোৎস্নালোকে সে তাকে দেখতে পায়। ধীরপদে হেঁটেই যেন সে তার সামনে গিয়ে দাঁড়াল, নিরাকার বর্ণহীন মানুষ। হয়তো তার দিকে কয়েক মুহূর্ত সে তাকিয়ে ছিলও। তারপর সে দৌড়তে শুরু করে।