গোলটা আমিই দিয়েছি। এখনও চিৎকার শোনা যাচ্ছে ওদের থ্রি চিয়ার্স ফর প্যালারাম—হিপ্ হিপ হুররে! এখন আমাকে ঘাড়ে করে নাচা উচিত ছিল সকলের। পেট ভরে খাইয়ে দেওয়া উচিত ছিল ভীমনাগের দোকানে কিংবা দেলখোস রেস্তোরায়। কিন্তু তার বদলে একদল পিনপিনে বিতিকিচ্ছি মশার কামড় খাচ্ছি আমি। চটাস করে মশা মারতে গিয়ে নিজের নাকেই লেগে গেল একটা রাম-থাপ্পড়। একটু উঁ-আঁ করে কাঁদব তারও উপায় নেই। প্যাচপেচে কাদার ভেতরে কচুবনের আড়ালে মূর্তিমান কানাই সেজে বসে আছি, আর আমার চারিদিকে মশার বাঁশি বাজছে। —থ্রি চিয়ার্স ফর প্যালারাম। আবার চিৎকার শোনা গেল। একটা মশা পটাস করে হুল ফোটাল ডান গালে। ধাঁ করে চাঁটি হাঁকালুম—নিজের চড়ে নিজেরই মাথা ঘুরে গেল। অঙ্কের মাস্টার গোপীবাবুও কখনও এমন চড় হাঁকড়েছেন বলে মনে পড়ল না। গেছি-গেছি বলে চেঁচিয়ে উঠতে গিয়ে বাপ বাপ করে সামলে নিলুম। দমদমার এই কচুবনে আপাতত আরও ঘণ্টাখানেক আমার মৌনের সাধনা। সন্ধ্যার অন্ধকার নামবার আগে এখান থেকে বেরুবার উপায় নেই। চিৎকার ক্রমশ দূরে মিলিয়ে যাচ্ছে : থ্রি চিয়ার্স ফর প্যালারাম–হিপ হিপ হুররে।