নীরা ত্রাতিনা গোল জানালা থেকে ভেসে ভেসে সরে যাচ্ছিল, সে হাত বাড়িয়ে জানালার কাচটা স্পর্শ করে নিজেকে থামিয়ে নেয়। জানালার শীতল কাঁচে মুখ স্পর্শ করে সে দূর পৃথিবীর দিকে তাকায়, দুই হাজার কিলোমিটার দূরের নীল পৃথিবীটাকে কী সুন্দরই না। দেখাচ্ছে! উপর থেকে মহাদেশগুলোকে স্পষ্ট দেখা যায়, সাদা মেঘে বিষুব অঞ্চলটা ঢেকে আছে। এরকম কোনো একটা মেঘের নিচে এই মুহূর্তে তার প্রিয় শহর টেহলিস আড়াল পড়ে গেছে। কতদিন সে তার শহরে যায় নি, মহাকাশে ভেসে ভেসে সে কী গভীর একটা ভালবাসা নিয়েই না মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকা শহরটির দিকে তাকিয়ে থাকে। ফ্লাইট ক্যাপ্টেন রিশান মহাকাশ স্টেশনের শেষ মাথায় বড় টেলিস্কোপটায় চোখ লাগিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিল। সে টেলিস্কোপ থেকে চোখ সরিয়ে ভেতরে তাকিয়ে নীরা ত্রাতিনাকে দেখতে পায়। ছিপছিপে কম বয়সী তরুণী, ঝকঝকে খাপখোলা তলোয়ারের মতো চেহারা। এই কম বয়সেই নিজেকে একজন সত্যিকার মহাকাশচারী হিসেবে পরিচিত করে ফেলেছে। মেয়েটির জন্য রিশান মাঝে মাঝেই নিজের বুকের গভীরে কোথাও এক ধরনের ভালবাসা অনুভব করে। কখনো সেটা সে প্রকাশ করে নি, কিন্তু সেটা কি এই মেয়েটার কাছে গোপন রয়েছে?