প্রাথমিক অংশ

প্রথমে দেখেছিল বীথি। দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠেছিল। লোকটা কী রক্তিম চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। যেন অন্তর পর্যন্ত তার দৃষ্টির কিরণ এসে বিঁধছে। তখন দুপুর বেলা। মাথার পরে খাড়া রোদ। শরীর খারাপ বলে আজ আর কলেজে যায় নি বীথি। অবশ্যি শরীরটা যে তার সত্যি সত্যি খারাপ ছিল, একথা জোর দিয়ে বলা যায় না। কারণ, কলেজের গাড়ি আসার একটু আগেও তাকে দেখা গছে কলেজে যাবার উদ্যোগ করতে। তারপর হঠাৎ কী হলো কে জানে। চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে ঘরে এসে দেখেছিল, আবু তার খাতায় লিখে গেছে—- আমার নাটক দেখতে তুই না এলি তো বয়েই গেল। আমি কি তোর জন্যে নাটক করছি? যা কলেজে, গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে থাক বইয়ের ওপর। আবু ইউনিভার্সিটিতে নাটক করছে। বীথিকে যেতে বলেছিল রিহার্সেলে। লজ্জা করেছে বীথির। মাথা নেড়ে বলেছিল, না। সেটা শুনে দুমদুম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে আবু। তারপর এই চিঠি। তাতেও কিছু হতো না। বই নিয়ে খোটা দেয়ায় ভীষণ অস্বস্তি হলো তার। চাচিমাকে গিয়ে বলল, গাড়ি এলে ফেরত পাঠিয়ে দিও। আজ যাবো না। চাচিমার কাছে আজ আড়াই বছর আছে বীথি। এই আড়াইটে বছরে এই ছায়া–ছায়া, কম কথা বলা, মায়া পরানো মেয়েটাকে নিজের মেয়ের মতো ভালোবেসে ফেলেছেন। হাতের রান্না ফেলে তিনি বললেন, কেন? তাঁর উদ্বিগ্ন স্বর শুনে সংকুচিত হলো বীথি। যেন কিছু না, তাই সাহস দেয়ার জন্যে হেসে উত্তর করল, ভালো লাগছে না। কী রে?