প্রাথমিক অংশ

গ্রামের বাঁওড়ের মধ্যে নৌকো ঢুকেই জল-ঝাঁঝির দামে আটকে গেল ৷ কানুনগো হেমেনবাবু বললেন—বাবলা গাছটার গায়ে কাছি জড়িয়ে বেঁধে নাও... বাইরের নদীতে ভাঁটার টান ধরেছে, নাটা-কাঁটার ঝোপের নীচের জল স’রে গিয়ে একটু একটু ক’রে কাদা বার হচ্ছে৷ হেমেনবাবু বললেন—একটুখানি নেমে দেখবেন না কোথায় পিন খোলা হয়েছে? যত শীগগির খানাপুরীটা শেষ হয়ে যায়... এমন সুন্দর বিকালটাতে আর কাজ করতে ইচ্ছা হ’ল না ৷ পিছনের নৌকো থেকে লোকজনেরা নেমে জায়গা ঠিক ক’রে সেখানে তাঁবু ফেলবে ৷ জরিপের বড় সাহেবের শীগগির সদর থেকে আসবার কথা আছে, কাজেই যত তাড়াতাড়ি কাজ আরম্ভ হয়, সকলের সেই দিকে ঝোঁক ৷ সাব ডেপুটি নৃপেনবাবু কাজ শেখবার জন্যে এইবার প্রথম খানাপুরীর কাজে এসেছিলেন ৷ বয়স বেশী না, ছোকরা—কিন্তু মাঝনদীতে নৌকা দুললেই তাঁর অত্যন্ত ভয় হচ্ছিল ৷ বোধ হয় ভয়কে ফাঁকি দেবার জন্যেই তিনি এতক্ষণ ছই-এর মধ্যে ঘুমিয়ে পড়বার ভান ক’রে শুয়েছিলেন—এবার ডাঙ্গায় নৌকা লাগাতে তিনি ছই-এর ভেতর থেকে বার হয়ে এলেন এবং একটু পরে হেমেনবাবুর সঙ্গে কথায় কথায় কি নিয়ে বেশ একটু তর্ক শুরু করলেন ৷