বুঝলেন, বিয়ের সময় আমার একটা আনক্যানি ফিলিং হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, আমি একজন মৃতদেহকে বিয়ে করছি। বলেন কী মশাই। এ যে সর্বনেশে কাণ্ড! তা এরকম মনে হল কেন আপনার? সেটাই বলতে চাইছি। পাশে বেনারসিতে মোড়া যে-মেয়েটি বসে ছিল, তার শরীরে যেন কোনও সারই নেই। মাঝে মাঝে যেন ঢলে পড়ে যাচ্ছিল, সম্প্রদানের সময় হাতটা ছুঁয়ে চমকে উঠেছিলাম, কোনও জ্যান্ত মানুষের শরীর কি এত ঠান্ডা হয়? তার আগে অবশ্য সাতপাক আর শুভদৃষ্টি হয়ে গেছে। কিন্তু মেয়েটি আমার দিকে তাকায়নি। পাশেই দাঁড়ানো এক মহিলার কাঁধে মাথা খানিকটা লটকে ছিল। মুখটা তখনও পানপাতায় ঢাকা। ভেবেছিলাম, সারা দিন উপোস আর ধকলে রোগা মেয়েটা লাতন হয়ে পড়েছে বুঝি! কুশণ্ডিকার সময় আমি অগাধ জলে। একেই বিয়ের প্রথাসিদ্ধ নার্ভাসনেস, তার ওপর একটা হিমশীতল হাত। আমারই তখন ধাত ছাড়ার উপক্রম। পারলে বিয়ের আসর ছেড়ে দৌড়ে পালাই। কিন্তু সে তো আর সম্ভব নয়, তাই কাঠপুতুলের মতো বসে বিয়ের মন্ত্র আউড়ে যাচ্ছিলাম। সে এক প্রাণান্তকর অভিজ্ঞতা মশাই! শেষ অবধি কি এরা ষড়যন্ত্র করে একটা ডেডবডিকেই বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়েছে? আমি কি কোনও ক্রিমিনাল ট্র্যাপের শিকার? এইসব আগড়মবাগড়ম ভাবতে-ভাবতে আমার মাথা ভোঁ-ভোঁ করছিল।