বিশাল মাঠ। কোনও দিকে যেন তার কূলকিনারা নেই। পুব-পশ্চিম আর উত্তরে আকাশে মেশা। দক্ষিণ গ্রাম। বৈশাখ মাস। দিগদিগন্তহীন ফসলি মাঠ এখন ফাঁকা। ধু ধু, ধূসর। তেল জল না ছোঁয়ানো। কালো শরীরে খড়ি ওঠার মতো। রুক্ষু ফাটা চটা। বড় তৃষ্ণা। কিন্তু এই জগতবেড় মাঠ তৃষ্ণায় কাঁদছে না। যেন রেগে তেতাল। আকাশের দিকে তাকিয়ে ফুঁসছে। গদুগদাধরের এই রকম মনে হচ্ছিল। আর হেসেছিল। কেন, এ জগতবেড় রুক্ষু ফাটা চটা মাঠ কি গদাধরের মতো গোয়ালা নাকি? লোকে বলে না। গদাধররা নিজেরাই বলে, আমরা গোয়ালারা বড়। গোঁয়ার। মিছে ঘাঁটিও না। রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে। মাটি কখনও তা হয়? আর কদিন? এ মাঠ ভিজবে। জলে ডুববে। সবুজ হবে। এখন দেখলে বিশ্বাস হতে চায় না। আবার যখন সবুজে ঢেউ খেলবে, তখনও বিশ্বাস হবে না এ মাঠের চেহারা এমন ছিল।