প্রাথমিক অংশ

শিশুটির জন্ম মাত্র সাত মাস দশ দিন গর্ভবাসের পর। মাতৃজঠরেই তার চাঞ্চল্য প্রকাশ পেয়েছিল। সেই অন্ধকার জলধিতে সে বেশীদিন থাকতে চায়নি। বাবু রামকমল সিংহ তখন উড়িষ্যায় মহাল পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। প্রাক-সন্ধ্যেবেলা তিনি মহানদীর বুকে বজরার ওপর বসে সূর্যাস্তের শোভা দেখছেন। এমন সময় একটা ছোট ছিপনৌকো তীরবেগে ছুটে এলো বজরার দিকে। সেটা থেকে লাফিয়ে নামলো তাঁর গোমস্তা দিবাকর। অকস্মাৎ দিবাকরকে দেখেই রামকমলের হৃৎকম্প শুরু হয়ে গিয়েছিল। নদীবক্ষে পবিত্র নির্মল বাতাসের মধ্যে দিবাকর দুঃসংবাদের গন্ধ নিয়ে এসেছে। রামকমল ধরেই নিলেন বিম্ববতী আর নেই। দিবাকরেরও সেই রকম ধারণা, গৃহকর্ত্রীকে সে সংজ্ঞাহীন মুমূর্ষু দেখে এসেছে। প্রভুকে সে ঠিক মতন সান্ত্বনা দিতে পারলো না। শুধু বললো, হুজুর আজই ফেরার গতিক কত্তে হবে। উকিলবাবু আমাকে পাটালেন। রামকমলের চক্ষু থেকে অবিরল অশ্রু বর্ষণ হতে লাগলো।