আমি একজন সামান্য কবি। হে প্রভুগণ, আপনারা গুণী মানী লোক, আপনারা কত পড়েছেন, কত শুনেছেন, আপনারা রসের বিচার করতে জানেন। আমি আপনাদের সভায় এসেছি, যদি অনুমতি পাই, আমি আপনাদের আজ দুজন নারী-পুরুষের ভালোবাসার গান শোনাবো। ভালোবাসার জন্যই মানুষ পৃথিবীতে জন্মায়, কিন্তু এই যে দুজন— এদের মতো এমন তীব্র-মধুর ভাবে আর কেউ বোধহয় কখনও ভালোবাসেনি। আপনারা মহৎ, আপনারা উদার, আপনারা জানেন ভালোবাসা হচ্ছে আগুনের মতো, যাতে কোনো পাপ স্পর্শ করে না। আপনারা অন্তর দিয়ে বুঝতে পারবেন, এই দুই হতভাগ্য প্রেমিক-প্রেমিকা প্রেমের শক্তিতে কি করে পাপ-পুণ্য ছাড়িয়ে গিয়েছিল। আহা, ওদের গান শুনলে যে-মানুষ পাহাড়ের মতো কঠোর ব্রহ্মচারী তারও বুক ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে ঝরনা। অপ্রেমিকও প্রেমিক হয়। সুখভোগ আমোদ-আহ্লাদে ডুবে আছে যে মানুষ, এই গান শুনে সেও এক মুহূর্ত থমকে যায়, তার মনে পড়ে- জীবনে কি যেন বাকি রয়ে গেল, বুকের মধ্যটা উদাস উদাস হয়ে যায়। এই গান শোনার পর, যখন আপনারা কেউ একা থাকবেন, আপনাদের মনে হবে- এই পৃথিবীতে যে জন্মালুম, জীবনটা ঠিক মতো বাঁচা হলো তো? নাকি এক জীবন মনের ভুলেই কেটে গেল! ভালোবাসাহীন জীবনই তো ভুল জীবন! আমি এই গান গ্রামে-গ্রামে হাটে-বাজারে, নদীর ধারে গেয়ে বেড়াই। আজ আপনাদের সভায় এসেছি। অনুমতি করুন।