সুন্দরবনের ছোট বালির পাশে মোটর-বোটটা নোঙর করা আছে। সোঁদরবনের মানুষখেকো বাঘের জন্যেই এবার আসা। মায়ের প্রচুর আপত্তি ছিল আমাকে আসতে দিতে, কিন্তু বাবার পারমিশানে মায়ের অনিচ্ছা ওভার রুলড হয়ে গেছিল। অবশ্য ঋজুদার সঙ্গে না এলে বাবাও সুন্দরবনে আসতে দিতেন কিনা সন্দেহ। ক্যানিং থেকে রাতে বোটে রওনা হওয়া হয়েছিল। সারারাত বোট চালিয়ে পরদিন দুপুরে চামটার কাছে এসে নোঙর করেছি আমরা। সারেঙ ও মাল্লাদের বিশ্রাম ও আমাদের সকলের খাওয়া-দাওয়ার জন্যে। তারপর বিকেল-বিকেল বোট ছেড়ে গভীর রাতে ছোট বালিতে এসে পৌঁছেছিলাম। বাউলে, মউলে ও জেলেদের নৌকাগুলো মাঝে মাঝে গহীন দুপুরে এসে লাগে এই ছোট বালিতে। তারপর মুখে উলু দেওয়ার মতো অদ্ভুত আওয়াজ করে জলের কলসি নিয়ে মিষ্টি জলের কুণ্ড থেকে জল তুলে নিয়ে যায় ওরা বড় ভয়ে ভয়ে। বাঘ যে কোথায় কখন এসে হাজির হবে, তা কেউই জানে না। বনবিবির পুজো দেয় ওরা, বাবা দক্ষিণরায়ের। পায়রা কি পাঁঠা বলি দেয় ঠাকুরের নামে। কোঁচড় ভরে আছাড়ি পটকা নিয়ে ডাঙায় নামে।