Cover image of লবঙ্গীর জঙ্গলে

লবঙ্গীর জঙ্গলে

বুদ্ধদেব গুহ
উপন্যাস

প্রাথমিক অংশ

অফিস থেকে ফিরেই টেবিলে একটা পোস্টকার্ড দেখলাম। জামা-জুতো না খুলেই চেয়ারে বসে পোস্টকার্ডটা তুলে নিলাম। অত্যন্ত খারাপ হস্তাক্ষরে ও খারাপ ইংরিজিতে লেখা একটা চিঠি। কোন পোস্ট-অফিসের ছাপ পড়েছে তাতে তাও বোঝা গেল না। চিঠিটা এই রকম : ভাই, আমি বিড়িগড়ের চন্দনী। সেই যে চন্দ্রকান্ত ও আমাকে তুমি মহানদীর বুকে ভেলায় ভাসিয়ে বিদায় দিয়েছিলে তারপর তোমার কোনোই খোঁজ জানি না। তোমাকে আমার খুব দরকার। ভীষণ বিপদ আমার। যদি একবার আসতে পারো তাহলে বড় ভালো হয়। এলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব। আমি টিকড়পাড়ায় এসে রয়েছি। যত তাড়াতাড়ি পারো এসো। কিন্তু তুমি কি আর আসবে? ইতি—তোমার চন্দনী চিঠিটা পড়ে প্রথমে রাগ হল; জঙ্গল-পাহাড়ের এরা কি ভাবে? আমরা কি কোলকাতায় ভেরাণ্ডা ভাজি যে, এসো বললেই আসতে পারি? তার উপর একটি যুবতী মেয়ে, যার সঙ্গে দশপাল্লা রাজ্যের খন্দমালের বিড়িগড়ের পাহাড়ে আমার অল্পদিনের পরিচয়—সে কোন সুবাদে আমাকে এমন চিঠি লেখে। যেন আমার ভরসাতেই সে চন্দ্রকান্তকে বিয়ে করেছিল, আমার ভরসাতেই ঘর পাততে গেছিল তার সঙ্গে।