প্রাথমিক অংশ

চোখ খুললেই যেন নিজের বুকটাকে দেখতে পায় শুকরা। একচিলতে মাঠ পেরিয়েই চায়ের গাছগুলো ঠাসাঠাসি দাঁড়িয়ে। যেন আকাশ ছুঁয়েছে দিগন্তে গিয়ে সবুজ জমাট ঢেউটা। আরো দূরে মাথাপোঁছা জঙ্গলে হাতছানি। দেখলেই বুক জুড়িয়ে যায়। চায়ের বাগান না বুকের কলিজা। কিন্তু আজকাল বেশিক্ষণ চোখ চাইতে কষ্ট হয় শুকরার। যত দিন যাচ্ছে তত শরীরটা একটু একটু করে আর নিজের বশে থাকছে না। এই যে হাতের চামড়া ঢলঢলে, পা দুটো কাঠির মত সরু–এগুলো কি নিজের? মাঝে মাঝে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখের সামনে ঝাপসা পর্দা ভাসে, কিছুতেই কাটতে চায় না। তখন, গাছ মাটি আকাশ সব একাকার। চোখ যখন বন্ধ হয় তখন মন কাজ করে যায়। মন দিয়ে দেখা শুরু হয়। সারাজীবন ধরে এই চোখদুটো যা দেখেছে তা বুকের মধ্যে সাজানো আছে। দৃষ্টি অচল হলেই সেগুলো মনের সামনে চলে আসে। নেড়ে চেড়ে দেখতে থাকে সে।