প্রাথমিক অংশ

তাঁর দিন শুরু হয় রাতের সেই প্রহরে, যখন পৃথিবীতে যোগীরাই জেগে থাকেন। দীর্ঘদিন ওই একই সময়ে নিদ্রাদেবী তাঁকে মুক্তি দিয়ে যান। কোনো জানান দেওয়া ঘড়ির প্রয়োজন হয় না। বিছানায় উঠে বসে তিনি বিশাল কাচের জানলার দিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থাকেন। রাতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে পর্দা এমন ভাবে ওখানে টেনে দেওয়া হয় যাতে তিনি একফালি আকাশ দেখতে পান। এ আকাশে কখনও হলুদ তারা জ্বলে কখনও মেঘ ময়লাটে। কিন্তু ঘাড় ফিরিয়ে ওদিকে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থাকাটাও আজ তার অভ্যাসে মিশে গেছে। সূর্য উঠতে এখনও অনেক দেরি। আর কে না জানে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এই সময়টাই পৃথিবী পবিত্র থাকে! বিছানা থেকে মাটিতে দুটো পায়ের পাতায় সমানভাবে ভর দিয়ে দাঁড়াতেই এখনও তাঁর সমস্ত শরীরে শিহরন ছড়ায়। এই শরীর, যার প্রতিটি শিরাকোষ বহু বহু ব্যবহৃত, যার প্রতিটির অস্তিত্ব তিনি যেন আলাদা করেই জানেন, এখন, এই মুহূর্তে, তারা ক্লান্তির কথা জানান দেয়। এবং তখনই সচল হন তিনি।