ভরত যখন পনেরো বছরের কিশোর তখন একটি ছবি দেখেছিল টিভিতে। তখন রবিবার বিকেলে বাড়ির সবাই একসঙ্গে বসে টিভি দেখত, গল্প করত, চা খেত। বড় সুখের সময় ছিল তখন। ছবিটা ছিল ইংরেজিতে, পটভূমিও ভারতবর্ষ নয়। ছিমছাম রাস্তা, গাড়িগুলো ট্রাফিক আইন মেনে চলছে, বাসে কেউ দাঁড়িয়ে নেই। বাড়িগুলোর দুপাশে বাগান, রাস্তার গায়ে সার দেওয়া গাছেরা দাঁড়িয়ে। ভোরবেলায় খবরের কাগজ আর দুধের প্যাকেট বাড়িগুলোর দরজায় রেখে দেওয়া হয়েছে গৃহস্বামী ঘুম ভেঙে তুলে নেন বলে। কোনো মতলববাজের দেখা পাওয়া গেল না যে সেগুলো চুরি করতে এসেছে। বাজারে হাঁকাহাঁকি চিৎকার নেই কিন্তু অনেকরকমের সবজি মাছ মাংস থরে থরে সাজানো রয়েছে যাদের গায়ে নির্দিষ্ট দামের লকেট ঝুলছে। তাই দেখে প্রয়োজনীয় ওজনের প্যাকেট তুলে নিয়ে গিয়ে লোকে কাউন্টারে দাম দিচ্ছে। ছবিটার আর কী কী ঘটনা ছিল, মানুষগুলো নিজেদের মধ্যে কী নাটক করেছিল তা ভরতের স্মরণে নেই কিন্তু ওইসব দৃশ্যগুলো দারুণভাবে মনে গেঁথে গিয়েছিল। ছবি দেখা শেষ হতেই সে প্রশ্ন করেছিল, আচ্ছা বাবা, আমাদের কলকাতা এ রকম হতে পারে না?