Cover image of সমরেশ মজুমদারের গল্প সমগ্র

সমরেশ মজুমদারের গল্প সমগ্র

সমরেশ মজুমদার
উপন্যাস

প্রাথমিক অংশ

এই মেঘ অসময়ের। তবু দু-দুটো দিন এঁটুলির মতো লেগে আছে আকাশের গায়ে। অভিরাম ভেবেছিল ঝড়ো বাতাস নুনের ছিটে দেবে। কিন্তু দুটো দিনরাত কাটল, কেটেই গেল। যে কোনও মুহূর্তেই মেঘগুলো জল হয়ে নামতে পারে। ব্যস, তাহলে আর রক্ষে নেই। সব গেল। এ যেন সব পাট চুকিয়ে নিশ্চিন্ত হওয়া বুড়ি মেয়েছেলেদের শরীরে নতুন আঁচড় পড়ার মতো ব্যাপার। ঝরেও ঝরে না জল, শুধু খটাং-খটাং শব্দ বাজে মেঘের হাড়ে-হাড়ে। যৌবনের কাঠঠোকরা বড় মারাত্মক। ঠুকে-ঠুকে ঠোঁট ভোঁতা তবু অভ্যেস মরে না। তাঁবুর বাইরে দাঁড়িয়ে অভিরাম। চারপাশের জঙ্গলটাও থম মেরে আছে। মেঘ দেখলেই, গাছের পাতা অসাড় হলেই পাখিগুলোর গলা পালটিয়ে যায়। জঙ্গলের শরীরে কালো রং লাগে, সেই রং বোধহয় পাখিদের শ্বাসে মাখামাখি হয়। তিনযুগ হয়ে গেল এই ভারতবর্ষের জঙ্গলে কেটে গেল অভিরামের, চরিত্র বোঝা এখনও হয়ে উঠল না। লোকে বলে মেয়েমানুষের মন নাকি দেবতারাও জানে না, হয়তো কিন্তু একটা সোমথ জঙ্গলের মন চরিত্র বোঝ দেখি কেমন হিম্মত?